মোঃ অহিদুজ্জামান (রুমু) : পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের গুরু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আদানি গোষ্ঠীকে। চুক্তিও অনুসারে ঝাড়খণ্ডের আদানি পাওয়ার লিমিটেড থেকে সরবরাহ শুরু করেছিল তাদের। কিন্তু মাঝপথে তাতে ছেদ পড়ল। বিদ্যুতের বিল বকেয়া থাকায়, বাংলাদেশে সরবরাহ কমিয়ে দিল গৌতম আদানির সংস্থা। ‘পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট’ অনুযায়ী, অক্টোবরের ৩১ তারিখের মধ্যে বিল পরিশোধ করার কথা ছিল। সে বিষয়ে আগাম সতর্ক করেছিলেন গৌতম আদানি। কিন্তু তবুও টাকা না দেওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হল। তার জেরে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট হচ্ছে বলে জানা যায়।
বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে আদানির সংস্থা। তবে জুলাই থেকে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা উত্তোলনে দাম বৃদ্ধি হয়েছে বলে জানায় আদানি সংস্থা। তারা জানায়, সপ্তাহে ১৮ মিলিয়ন ডলারের বদলে দাম বেড়ে দাঁড়ায় ২২ মিলিয়ন ডলার। সে সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারও অবগত। তবে গত ৫ আগস্ট সে দেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জেরে বিদ্যুতের বিল বকেয়া রয়ে গিয়েছে। অক্টোবরের ৩১ তারিখের মধ্যে বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। তা মনে করিয়ে ২৭ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। কিন্তু সময়ের মধ্যে বিল না দেওয়ায় বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ৩১ তারিখ থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ কমানো হলো।
লেনদেন হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বকেয়ার পরিমাণ ৮৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু অন্তর্বর্তী ইউনূস সরকারের ভাঁড়ে এখন ডলার সংকট। গত সপ্তাহে বাংলাদেশের কৃষি ব্যাংক সেই অর্থ মেটাতে পারেনি। এত অর্থ বাকি থাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকেরও কম করে তারা। ১৬০০ মেগাওয়াটের বদলে বৃহস্পতিবার থেকে ৭০০ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানা যায়। তাতেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিয়েছে। আদানি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বকেয়া না মেটালে সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।