দেশব্যাপী বিলুপ্ত Russell’s Viper এর উপদ্রপ, বাংলাদেশের কৃষি ধ্বংসে মোদীর মনসাদেবীর ডিসট্রিবিউশন 

সাম্প্রতিক Russell’s Viper এর দেশব্যাপী বিস্তৃতির খন্ড চিত্র।

মো: অহিদুজ্জামান : ইদানিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইলেকট্রনিকস মিডিয়া, প্রিন্টিং মিডিয়ায় বাংলাদেশব্যাপী ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ বিলুপ্ত Russell’s Viper / চন্দ্রবোড়া এর আকষ্মিক বিস্তার নিয়ে জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। মৃত্যুভয়ে কৃষকেরা ফসলের ক্ষেতে যাচ্ছে না। সাম্প্রতিক, স্বল্প সময়ে এই ভয়ঙ্কর বিষধর সাপের দংশনে ১০০ জনেরও বেশী মানুষ দেশব্যাপী মারা গেছে। 

প্রশ্ন আসে বিলুপ্ত Russell’s Viper / চন্দ্রবোড়া সাপের এই আকষ্মিক বিস্তার কি প্রকৃতির নিয়মে হচ্ছে, নাকি এটা ডিসট্রিবিউশন?

দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার ভূরাজনীতি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, বিশ্ব মানচিত্রে ভারতই একমাত্র দেশ যার প্রতিবেশী কোন রাষ্ট্রের সাথে সুসর্ম্পক নেই। এমনকি প্রতিবেশী নেপাল, যার শতকরা ৮১ ভাগ জনগণই হিন্দু ধর্মের অনুসারী এবং ব্রাহ্মণের দেশ, তাদের সাথেও বৈরী সম্পর্ক। মূলত দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার সব দেশই ভারতের নরেন্দ্র মোদী সরকার ও তার এজেন্টদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় আগ্রাসন ও আক্রমনের শিকার কোন না কোন ভাবে। আর গায়ে পড়ে এক পাক্ষিক সীমান্ত জুড়ে বিবাদতো আছেই। 

ইদানিং বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে  ‘বয়কট ইন্ডিয়া’ অথবা ‘ভারতীয় পন্য বর্জন’ আন্দোলন বেশ চাউর এবং সফলও।

অবস্থাদৃষ্টে ধারনা স্পষ্ট, খাদ্যে আমাদের দেশজ কৃষির উপর নির্ভরতা কমাতে পারলে, আমাদের ভারতমুখি নির্ভরশীলতী বাড়াতে তারা সক্ষম হবে। ভারতীয় র’এর বাংলাদেশে  Russell’s Viper এর ডিসট্রিবিউশনের কুটচালটি এখানেই। 

বাংলাদেশের আবাদী জনপদগুলোর একসময়ের ত্রাস, Russell’s Viper / চন্দ্রবোড়া সাপ অনেক আগেই বিলুপ্ত ঘোষিত। গ্রামের প্রবীনদের সাথে আলাপচারিতায় জানা যায়, তাদের শৈশবে মাঠের পর মাঠ অনাবাদী থাকত এই ভয়ঙ্কর বিষধর  Russell’s Viper / চন্দ্রবোড়া সাপের আক্রমনের ভয়ে।

প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট IUCN  Russell’s Viper সাপকে বাংলাদেশে ২০০২ সালে বিলুপ্ত ঘোষণা করে।  কিন্তু ইদানিং বাংলাদেশের আবাদী জনপদগুলোতে এই সাপের বিস্তার আকষ্মিক ও বোমা  বিষ্ফোরনের মত। 

বাংলাদেশে বিলুপ্ত হলেও ভারতে এই সাপের অস্তিত্ব সব সময়ই ছিল। ধর্মীয় সংস্কৃতির কারনে সেখানে তারা সাপ মারে না বরং ঐশিক শক্তি হিসাবে লালন করে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুসন্ধান করলে অসংখ্য ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যাবে, বস্তায় ভরে অসংখ্য  Russell’s Viper  সাপ তারা বনে জঙ্গলে ছেড়ে দিচ্ছে। 

Russell’s Viper সাপের বাংলাদেশব্যাপী আকষ্মিক বিস্তার পর্যালোচনা করলে বোধগম্য হবে – গত কয়েক বছরের আংশিক বন্যা, এমনকি বিগত কয়েক দশকের বন্যার পানির মাধ্যমেও মোদীর এই মনসা দেবীর বাংলাদেশব্যাপী ছড়ানোর সুযোগ নাই। এমনকি আভ্যন্তরীন নদীগুলোর নাব্যতাও বিভিন্ন জেলাব্যাপী কৃষিজমিতে ভয়ঙ্কর এই সাপের বিস্তারে সহায়ক নয়।দেশের cross-country নদীগুলোও বিলুপ্ত অনেক আগেই। সুতরাং দেশব্যাপী Russell’s Viper / চন্দ্রবোড়া সাপের বিস্তার, পুরাটাই ডিসট্রিবিউশন।

মোদ্দা কথা, দেশজ কৃষি উৎপাদন ঠেকাতে ও খাদ্যে ভারতমুখী নির্ভরশীলতা আনতে মোদীর Russell’s Viper বাংলাদেশের কৃষির বিরুদ্ধে একটা সুদূর প্রসারী কুটচক্রান্তের অংশ। লক্ষ্য আরেকটা – ‘বয়কট ইন্ডিয়া’ অথবা ‘ভারতীয় পন্য বর্জন’ আন্দোলন থেকে দৃষ্টি ফেরানোর চেষ্টা। উল্লেখ্য ভূরাজনীতিতে বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন রূপে এমন  কুটকৌশলের দৃষ্টান্ত বহু আছে। 

ভয়ঙ্কর এই বিষধর সাপ মোদীর এজেন্টরা এমনভাবে দেশব্যাপী ডিসট্রিবিউশন করেছে যে জনজীবন ও দেশ খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির সন্মুখীন। নিশ্চিত মৃত্যুর ভয়ে কৃষকরা ফসলের ক্ষেতে যেতে ভয় পাচ্ছে। 

এই সাপ নিধনই একমাত্র সমাধান।প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এর বিশেষ কোন অবদান নাই। দেশব্যাপী পুরস্কারে উৎসাহিত করে মোদীর এই  মনসাদেবী নিধনের উদ্যোগ নেওয়া হোক। যদিও বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে এই সাপ নিধন দণ্ডনীয় অপরাধ। ভারতীয় র’এর চক্রান্ত রুখতে এই আইন ভঙ্গ করলে আমাদের সংবিধান,  মহাভারত অশুদ্ধ হবে না। সুতরাং সাধু-সুবোধ সবাই সাবধান। আমরা লক্ষ্যভ্রষ্ট না হই, বাংলাদেশে ভারতীয় র’এর এই চক্রান্ত রুখে দেই।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *