মোঃ অহিদুজ্জামান (রুমু) : চরম আর্থিক সংকটে ধুঁকছে পাকিস্তান। দেশটির বিদেশি ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনাও তলানিতে ঠেকেছে। দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে সামনে এলো অভাবী বহু পাকিস্তানি নাগরিকদের দুর্দশার নতুন ছবি। জানা গিয়েছে, বহু পাকিস্তানি আর্থিক সংকট কাটাতে তাদের নিকটবর্তী দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। মূলত সৌদি আরব, ইরাক, ইরানের মতো দেশে গিয়ে রাস্তাঘাটে, ধর্মস্থানে ভিক্ষা করছে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ পাক প্রশাসন। তারা এমন ২ হাজার পাসপোর্ট বাতিল করেছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে।
পাক সরকার ঔ পাসপোর্টগুলিকে সাত বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছে বলে পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে। সেদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয় এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। অন্য ইসলামিক দেশগুলিতে যত ভিক্ষুক গ্রেপ্তার হয়েছে সম্প্রতি, তাঁদের মধ্যে ৯০ শতাংশই নাকি পাকিস্তানি! ইতিমধ্যেই ইরাক ও সৌদি রাষ্ট্রদূতরা নালিশ করেছে, তাঁদের দেশের জেলগুলিতে স্থান সংকুলান হচ্ছে না এই পাক ভিখারিদের কারণে। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর, সৌদি আরব ও ইরাকের তরফ থেকে পাক সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে, এইভাবে পাক ভিক্ষুকদের তাদের দেশে ঢুকে পড়া যেন বন্ধ করা হয়। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, ২০২৩ সালে মক্কার মসজিদ এলাকায় যত পকেটমার ধরা পড়েছে তারা সকলেই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত।
বলে রাখা ভালো, করোনা মহামারী, অপশাসন ও ঋণের ভারে পাকিস্তানের অর্থনীতি কার্যত হাঁটু গেড়ে বসে পড়েছে। জোর ধাক্কা খেয়েছে পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি। ফলে তলানিতে ঠেকেছে বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার। যে কারণে খাবার থেকে ওষুধ সবকিছুরই দাম ভয়ানক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে সরকার বদলেছে। কিন্তু পাকিস্তানের অর্থনীতির কোনও উন্নতি হয়নি। যার প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের জীবনেও। দুমুঠো খাবার জোগাড় করতে বিদেশের মাটিতে পাড়ি দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি কিংবা চুরি-ছিনতাইয়ের পথে হাঁটছেন অনেকেই। স্বাভাবিক ভাবেই এমন পরিস্থিতিতে ক্ষেপে লাল শাহবাজ শরিফ সরকার। তারা সাফ জানিয়েছে, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে এমন ঘটনায়। তাই তা রুখতেই ভিসা বাতিলের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।