পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় “আওয়াজ উডা” / “কথা ক” – ৫ আগষ্ট বিল্পব পরবর্তী যারা চেতনা সংকটে ভুগছে, তাদের জ্ন্য


৫ আগষ্ট বিল্পব, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পলায়ন ও অন্তর্বর্তীকালীন বিল্পবী সরকার।
মোঃ অহিদুজ্জামান (রুমু) :  ৫ আগষ্ট বিল্পব পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন বিল্পবী সরকারের রোডম্যাপ কি? এবং দল-মত নির্বিশেষে আমাদের চেতনা কি?


অন্তর্বর্তী কালীন বিল্পবী সরকারের আগামীর পথ চলা স্বচ্ছ, সহজ ও সরল। সবার আগে দেশ, দল-মত-পথ-প্রথা পরে এবং এটাই আমাদের সবার চেতনা। এই মন্ত্রের সঠিক রূপদানের  ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্র সংস্কার ও পরবর্তীতে জনগনের ভোটে  নির্বাচিত গনতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর। 


 বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে ও বিদেশে বাংলাদেশীদের একাংশের দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু সংখ্যক আবেগে অতিউৎসাহী হয়ে বাহুবল দেখাচ্ছে। কথা স্পষ্ট, ঐ সমস্ত চেতনার কোনটাই  টিকবে না।ঐ ধারনা পোষন করার দিন শেষ। ৫ আগষ্ট বিল্পব পরবর্তী দ্বিতীয় কিছু ভাবার অবকাশ নাই। সুতরাং দেশের স্বার্থে আমরা সবাই সংশোধন হই। রাজনীতির সুস্থধারা ফিরিয়ে আনতে দল-মত নির্বিশেষে সবাই দেশের অতন্ত্র প্রহরী হই। 


দেশ স্বাধীনের পর থেকে বিগত দিনগুলোতে সব আমলেই কিছু সংখ্যক সুশীল, আমলা, রাজনীতিবিদ, অতিউৎসাহী জনগন, অন্যান্য পেশাজীবি ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটদের  কাছে বাংলাদেশ ছিল – যেমনটা ধর্ষকের হাতে একজন যুবতী নারী থাকে। তারা এক ইঞ্চি, এক সেকেন্ডের জন্যও দেশটাকে, দেশের সাধারন জনগনকে ছাড় দেয় নাই । 


পাখির চোখে দেখলে, ঐ কিছু সংখ্যক দেশ ও জনগনের দোহাই দিয়ে, হরেক রকম চেতনা, হরেক রকম মতবাদের ধোয়া তুলে যত ধরনের ধান্দাবাজী আছে, সবই করেছে দেশ ও জনগনের উপর। সবই ছিল Joseph Conrad এর  Heart of Darkness (ভূয়া চেতনার ঢালে কিভাবে দুঃশাসন হয়) এর প্রতিচ্ছবি। 


বিগত দিন গুলোতে সবকিছুর প্রতিদানে স্বাধীন দেশের জনগন পেয়েছিল ঋনের বোঝা, অমানবিক নির্যাতন-অত্যাচার এবং রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব হয়েছিল অরক্ষিত। এমনকি এই স্বাধীন দেশের গ্রাম, পাড়া, মহল্লায় অপরাজনীতির সামাজিকীকরন এমন পর্যায়ে পৌছায়ছিল যে,  “রাষ্ট্র যন্ত্রের পচন, গনতন্ত্র, ভোটাধিকার, বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, আইনের শাসন, শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা ব্যবস্থা, ব্যাংকিং সেক্টরের ধ্বংস, টাকা পাচার ইত্যাদি” এসব বিষয়ে আলোচনা করাটাও ছিল ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ভীতির কারন। সুতরাং যেভাবেই হোক, ৫ আগষ্ট বিল্পবের কোন বিকল্প ছিল না। 


এই প্রেক্ষাপটে দীর্ঘ অপচর্চার প্রতিযোগীতায় অভ্যস্ত হয়ে আমাদের অনেকের  দম বন্ধ হয়ে আসবে – এটাই  স্বাভাবিক। অন্যপক্ষে  রাজনৈতিক অপসংস্কৃতির দীর্ঘ চর্চার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় প্রভাবে আম-জনতার ভয়, দ্বিধা ও শংকাহীন ভাবে স্বাধীনতা ভোগের সাহস  এখনও পুরাপুরি আসে নাই। এমন কি আগামিতে  ভোটাধিকার ফিরে আসলেও আমরা কি ভয়হীন ও দ্বিধাহীনভাবে পছন্দের প্রার্থীকে  দিতে পারব কি? নুন্যতমভাবে আমাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতাগুলো  মহল্লাকেন্দ্রীক গডফাদারদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক শক্তির বলয়ের কাছে পরাধীন হয়ে থাকবে নাতো!


সমাধান একটাই। পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় “আওয়াজ উডা” / “কথা ক”। যারা রাজনীতিকে কলুষিত করেছে, যারা রাজনীতিকে বাহন করে সমাজকে প্রভাবিত করেছে, যারা রাষ্ট্র যন্ত্রকে নষ্ট করেছে –  যে যার অবস্থান থেকে রাষ্ট্রীয় আইনে তাদের বিরুদ্ধে সঠিক আলামতসহ মামলা করুন। নুন্যতম পদক্ষেপ হিসাবে দেশব্যাপী স্থানীয় ভাবে তাদের সকল অপকর্মের নমুনাসহ তালিকা সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করুন। 


পরিশেষে আমরা দল-মত নির্বিশেষে অতন্ত্র প্রহরীর ভূমিকায় থেকে ধৈয্য ধারণ করি। দেশ স্বাধীনের পরেও স্বাধীন দেশে ছাত্র-জনতা-শ্রমিকের  রক্ত যেতেই আছে। স্বাধীন দেশে রক্ত যাবে কেন? স্বাধীন দেশ রক্ষার জন্য, জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিল্পব করতে হবে কেন?  এত রক্ত বৃথা যেতে পারে না।  


আশাকরা যায়, অতি সত্তর সুস্থধারার রাজনীতি, সুস্থধারার রাজনীতিবিদদের কাছেই ফিরে যাবে। তানাহলে আবারও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন, হয়তবা আরও রক্ত যাবে। কিন্তু জনগনের মনের আশার প্রতিফলনের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবেই, হবে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *