দক্ষিণ-পূর্ব ইরানের সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশে অবস্থিত চাবাহার সমুদ্রবন্দর উন্নয়নের জন্য ১০ বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত এবং ইরান। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পরপরই এমন পদক্ষেপের জন্য ভারতীয় কোম্পানীগুলো নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে পারে বলে সতর্ক কনেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ডেপুটি মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল। সেখানে ভারত-ইরান চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বেদান্ত স্পষ্ট বলেন, ‘চাবাহার বন্দর নিয়ে ইরানের সঙ্গে ভারতের চুক্তি হয়েছে, সেটা আমরা জানি। আমি চাই ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে আমাদের বিস্তারিত জানাবে। ইরানের সঙ্গে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, চাবাহার বন্দর-সমস্ত কিছু নিয়েই ভারতের কথা বলা উচিত।’
বেদান্ত বলেন, ‘যেকোনো সত্তা, দেশ যদি ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সেই দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হতেই পারে।’ ভারতের নাম উল্লেখ্য না করেই তিনি হুশিয়ারি দেন, ‘যারাই ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি করবে তাদের সম্ভাব্য ঝুঁকি ও নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত, তারা নিজেরাই নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথ খুলে দিচ্ছে।’
ইরানের প্রেস টিভি জানিয়েছে, সোমবার ইরানের রাজধানী তেহরানে ইরানের সড়ক ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী মেহরদাদ বজরপাশ এবং ভারতের বন্দর, জাহাজ ও নৌপথ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী, চুক্তির অধীনে ইরানের বন্দর ও সামুদ্রিক সংস্থা চাবাহার শহীদ বেহেশতি বন্দরের মালবাহী এবং কন্টেইনার টার্মিনালের অংশগুলো ১০ বছরের জন্য ভারতের কাছে হস্তান্তর করবে। ফলে আগামী ১০ বছর ইরানের চাবাহার বন্দর পরিচালনা করবে ভারত।
এতে বলা হয়েছে, চাবাহার বন্দরকে একটি আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং যোগাযোগ কেন্দ্রে পরিণত করার জন্য, তেহরানকে সহায়তা করবে নয়া দিল্লি। প্রসঙ্গত, বাণিজ্যিক ও যোগাযোগের দিক থেকে, ভারতের জন্য এই চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এতদিন, আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ায় যাওয়ার জন্য ভারতকে পাকিস্তানের উপর দিয়ে যেতে হত। চাবাহার বন্দর হাতে আসায়, পাকিস্তানকে এড়িয়ে এই অঞ্চলের সঙ্গে ভারত সহজেই যোগাযোগ ও বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারবে। এই বন্দরকে অদূর ভবিষ্যতে ইন্টারন্যাশনাল নর্থ-সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডরের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে, ভারত থেকে ইরান হয়ে রাশিয়া পর্যন্ত একটি নতুন বাণিজ্যিক পথ খুলে যাবে।