মায়ানমারে ফের গৃহযুদ্ধের আগুন, সেন্টমার্টিনে ৩১ জন রোহিঙ্গা ও দুই সেনা সদস্যের আশ্রয়, বাংলাদেশে ফের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল নামার আশঙ্কা

মোঃ অহিদুজ্জামান : গৃহযুদ্ধে পুড়ছে মায়ানমার। সংঘাতে জড়িয়েছে বার্মিজ সেনা তথা ‘টাটমাদাও’ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। এখনও নেভেনি সংঘর্ষের আগুন। দফায় দফায় সংঘাতের জেরে প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন সাধারণ মানুষ এই সংঘাতের আঁচ এসে লাগছে পড়শি দেশগুলোতেও। মূলত বাংলাদেশেই প্রভাব পড়ছে বেশী।  মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছেন রোহিঙ্গারা। ফের গত শুক্রবার বেশ কয়েকজন বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।তাদের মধ্যে  ২ জন মায়ানমার সশস্ত্র সেনা সদস্যও রয়েছে।বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ও দূর্বল সীমান্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনার কারনে ফের বাংলাদেশে মায়ানমারের সেনাসদস্য ও রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ বাড়ছে। 

মায়ানমারের রাখাইনে রাজ্যের মংডুতে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সঙ্গে সেনা তীব্র যুদ্ধ চলছে। এই পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচাতে শুক্রবার ভোরে দেশটি থেকে ৩৩ জন সেন্টমার্টিন দ্বীপে চলে আসেন। তাঁদের মধ্যে মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ২ সদস্য রয়েছেন। এনিয়ে, সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানান, কয়েক দিন ধরে টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মংডুতে সংঘর্ষ চলছে। সেখানকার বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের এলাকাগুলো। এই পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচাতে আজ ভোরে ৩৩ জন যাত্রীবোঝাই একটি ট্রলার মংডু থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভিড়েছে। বিষয়টি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) জানানো হয়েছে।

এই বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী আধিকারিক (ইউএনও) আদনান চৌধুরী জানান, ৩১ জন রোহিঙ্গা ও দুই সেনা সদস্য সেন্টমার্টিনে আশ্রয় নিয়েছে। বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্ত ও নাফ নদীতে নজরদারি জোরদার করেছে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে, কক্সবাজারের টেকনাফ নাফ নদী সীমান্তে মায়ানমারের এলাকায় মাইন বিস্ফোরণে ১ রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছেন। তার নাম মহম্মদ আয়াজ। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।

বসুত্রে জানা যায়, মায়ানামারের এই সংঘর্ষের জেরে বাংলাদেশে ফের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল নামার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যা নিয়ে চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী। পাঁচ বছর আগেও দুপক্ষের সংঘর্ষে ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল। যাতে চাপ বেড়েছে দেশের সরকারের। হিংসা, মানবপাচার এবং মাদক কারবারের কারণে ভয়ানক হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের একাধিক রোহিঙ্গা শিবিরের পরিস্থিতি। যা নিয়ন্ত্রণ করতে এখন হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *